জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম একদম সহজ। জন্মনিবন্ধন হচ্ছে কোনো শিশুর জন্মের পর তার প্রথম পরিচয়। কোনো শিশুর জন্মের পর তার সকল তথ্য আইনগত ভাবে সরকারি খাতায় লেখাকেই জন্ম নিবন্ধন বলে।
জন্ম নিবন্ধন একটি অত্যন্ত গুরত্বপুর্ন কাগজ। এইটা তে কোনোপ্রকার ত্রুটি থাকলে আপনি অনেক কাজই সম্পন্ন করতে পারবেন না।
যেমন পাসপোর্ট, স্কুলে ভর্তি, চাকুরীর জন্য আবেদন, ভিসা লাগানো ইত্যাদি।
আমাদের অসাবধানতার কারনে অনেক সময় আমাদের জন্মনিবন্ধনে ভুল তথ্য দিয়ে থাকি। আবার অনেক সময় জন্ম নিবন্ধন কাগজ তৈরি করার সময় সরকারি কর্মকর্তা ভুল তথ্য দিয়ে ফেলে।
এর ফলে আমরা ভুগান্তিতে পরে যাই।
নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন এর নিয়মাবলি
আগে জন্মনিবন্ধন তৈরি করার জন্য সরকারি কর্মকর্তা জনগণের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হাতে লিখে জন্ম নিবন্ধন তৈরি করে দিতো।
এখন ডিজিটাল যুগ। কম্পিউটার এর যুগ। এখন ঘরে বসে মোবাইল বা কম্পিউটার এর মাধ্যমে খুব সহজেই আবেদন করা যায়।
কিছু ডকুমেন্ট থাকলে আর একটু ধারনা থাকলে আপনি নিজেও খুব সহজেই পারবেন জন্ম নিবন্ধন এর জন্য আবেদন করতে।
জন্ম নিবন্ধন আবেদন করতে কি কি লাগে
জন্ম নিবন্ধন আবেদন করতে কিছু তথ্য বা ডকুমেন্ট লাগে যা বয়স বেধে পরিবর্তন হয়।
বয়স ০ থেকে ৪৫ দিন হলে নিচের ডকুমেন্ট গুলো লাগবে
বয়স ৪৬ দিন থেকে ৫ বছর হলে নিচে দেওয়া তথ্য গুলো লাগবে।
৫ বছরের অধিক বয়স হলে নিচে দেওয়া তথ্য গুলো লাগবে।
চেস্টা করবেন বাচ্ছার ৫ বছর হওয়ার আগে জন্ম নিবন্দন তৈরি করার। ৫ বছর পর জন্ম নিবন্ধন তৈরি করতে অনেক বেশি ডকুমেন্ট লাগে যা অনেক ঝামেলায় ফেলে দেয়।
জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার নিয়ম
সাধারণত আপনি দুইভাবে জন্মসনদ এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
১) ইউপি তে গিয়ে
২) অনলাইনে
ইউপিতে গিয়ে আবেদন করার নিয়ম
আপনি চাইলে আপনার এলাকার ইউনিয়নে গিয়ে খুব সহজেই জন্মনিবন্ধন এর জন্য আবেদন করতে পারবেন।
ইউপিতে গিয়ে আবেদন করতে পিতা মাতার জন্মনিবন্ধন কার্ড লাগবে। এবং অবশ্যই তা অনলাইন করা থাকতে হবে। যদি পিতা মাতার কার্ড অনলাইন করা না থাকে তাহলে সন্তানের জন্মনিবন্ধন কার্ড বানানো যায় না।
এবং ইউনিয়নে গিয়ে জন্মনিবন্ধন কার্ড বানাতে কার্ড প্রতি ১৫০ টাকা করে ফি লাগবে। আপনার যদি আর্থিক সমস্যা থেকে থাকে তাহলে আপনি আপনার এলাকার চেয়ারম্যান এর কাছে আবেদন করে ফি কমাতে পারবেন।
অনলাইনে আবেদন করার নিয়ম
অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন আবেদনের পুরাতন ওয়েবসাইটটি পরিবর্তন করে নতুন ওয়েবসাইট চালু করা হয়েছে। জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার জন্য https://bdris.gov.bd/ এই লিংকে ভিজিট করুন। এখানে নিচের মত একটি পেইজ পাবেন।
আপনি কোন ঠিকানায় জন্ম নিবন্ধন করাতে চান, এখানে তা বাছাই করুন।
অর্থাৎ যে ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন থেকে জন্ম নিবন্ধন করতে চান, সেটি নিবন্ধনাধীন শিশু বা ব্যক্তির কোন ঠিকানায় তা এখানে নির্বাচন করে পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
নামের ২ টি অংশ থাকলে ১ম অংশটি নামের প্রথম অংশের ঘরে লিখবেন ও ২য় অংশটি নামের শেষের অংশে লিখবেন।
যদি নামের ৩টি অংশ থাকে ১ম ২টি অংশ নামের প্রথম অংশে লিখবেন এবং শেষ অংশটি নামের শেষের অংশের ঘরে লিখবেন।
যদি নাম ১ শব্দে হয় অর্থাৎ নামের অংশ ১টি হয়, এক্ষেত্রে প্রথম অংশ খালি থাকবে। শুধুমাত্র নামের শেষ অংশে নাম লিখবেন।
একইভাবে ইংরেজিতেও পূরণ করবেন। এছাড়া, অন্যান্য তথ্যসমূহ ও জন্মস্থানের ঠিকানা সঠিকভাবে পূরণ করুন।
সবশেষে ডান পাশের পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
এই ধাপে নিবন্ধনাধীন শিশু বা ব্যক্তির পিতা ও মাতার অনলাইন বা ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন নম্বর ও জাতীয়তা দিতে হবে।
এখানে পিতা-মাতার ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন নম্বর লিখার পর স্বয়ংক্রীয়ভাবে নামসমূহ আসবে। এগুলো আপনি এডিট করতে পারবেন না।
এজন্য, পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধনটি ডিজিটাল বা অনলাইন কিনা তা অবশ্যই আগে যাচাই করে নিবেন।
বাবা মায়ের জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনলাইনে না থাকলে, শিশুর জন্ম নিবন্ধন আবেদন করা যাবেনা।
এ পর্যায়ে আপনাকে বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানার তথ্য প্রদান করতে হবে। নিচের ছবিটি দেখুন।
স্থায়ী ঠিকানার ক্ষেত্রে, জন্মস্থান ও স্থায়ী ঠিকানা একই হলে চেক বক্সে টিক দিন (লাল বক্সে চিহ্নিত)। এছাড়া বর্তমান ঠিকানার ক্ষেত্রেও স্থায়ী ঠিকানা ও বর্তমান ঠিকানা একই হলে (লাল বক্সে চিহ্নিত) চেক বক্সে টিক দিন।
অন্যথায়, ঠিকানাগুলো নির্বাচন করে দিন এবং গ্রাম, বাসা ও সড়ক নম্বর লিখে দিন। এরপর পরবর্তী বাটনে ক্লিক করুন।
এখন আবেদন কারীর তথ্য দিতে হবে।
আবেদন কারীর তথ্য
এ ধাপে যিনি এই জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করছেন, তার তথ্য দিতে হবে। সাধারণত একটি শিশুর জন্ম নিবন্ধনের জন্য দায়ী ব্যক্তি হচ্ছেন পিতা, মাতা, পিতামহ, পিতামহী, মাতামহ, মাতামহী বা আইনগত অভিভাবক।
তাই শিশুর জন্ম নিবন্ধনের আবেদন তারাই করে থাকেন।