
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আবারও বলেছেন, ক্ষমতাসীন সরকারের অধীনে কোন নির্বাচন হবে না।
“যতক্ষণ পর্যন্ত না হাসিনা পদত্যাগ করছে, সংসদ ভেঙে দেয়া হচ্ছে, এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দেয়া হচ্ছে। ততক্ষণ এদেশে কোন নির্বাচন হবে না” – শনিবার কুমিল্লায় বিএনপির এক গণসমাবেশে বলেন মি. আলমগীর।
বিগত গণসমাবেশগুলোর মতো কুমিল্লার এ সমাবেশেও মূল দাবি ছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন।
এছাড়া দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি, তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার এমন আরও নানা দাবির কথা উঠে আসে এ সমাবেশে। সেইসাথে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, দুর্নীতি, অর্থ-পাচারের বিরুদ্ধেও প্রতিবাদ করেন দলের নেতারা।
কুমিল্লার টাউন হলে এই গণ-সমাবেশ শুরু হয় বেলা ১২ টার দিকে। তবে শনিবার সকাল থেকেই বিএনপি নেতাকর্মীরা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সমাবেশ স্থলে ভিড় করতে থাকেন।
সমাবেশে আগতদের বেশিরভাগই আসেন দক্ষিণের বিভিন্ন জেলা থেকে। বিগত সমাবেশগুলোর মতো এবারে সমাবেশের আগের দিন থেকে কোন পরিবহন ধর্মঘট না থাকায় এক প্রকার বিনা বাধায় নেতাকর্মীদের সমাবেশ-স্থলে আসতে দেখা যায়।
অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশের মতো পথে পথে বাধা দেওয়ার তেমন কোনও খবর পাওয়া যায়নি। এ কারণে একদিন আগে থেকেই নেতা-কর্মীরা সমাবেশ-স্থলে আসতে শুরু করেন। রাতে মাঠে হাজার হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতি দেখা যায়।

বেলা সাড়ে ৪টার দিকে বক্তব্য দেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি তার বক্তব্যে বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত না হাসিনা পদত্যাগ করছে, সংসদ ভেঙে দেয়া হচ্ছে, এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দেয়া হচ্ছে। ততক্ষণ এদেশে কোন নির্বাচন হবে না।
তিনি বলেন, এবারও বিএনপি’র মূল দাবি, “তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন, সংসদ বিলুপ্ত করে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন এবং সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন।”
“এছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়” – বলেন মি. আলমগীর। এছাড়া ১০ই ডিসেম্বর বিএনপির সমাবেশ কোথায় হবে সেটি নিয়ে এখনও যে দোটানা চলছে সে বিষয়ে মির্জা আলমগীর বলেন, তারা ঢাকায় নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করতে চান। এর আগে বিএনপিকে ঢাকার বাইরে পূর্বাচল বা ইজতেমা মাঠে সমাবেশ করার পরামর্শ দেয়া হয়েছিল।
সবশেষ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিএনপি সোহরাওয়ার্দি উদ্যানে সমাবেশ করতে চাইলে অনুমতি দেয়া হবে। তবে বিএনপি এখন নয়াপল্টনে সমাবেশের ব্যাপারেই তাদের অবস্থানের কথা জানিয়েছে।

এদিকে ঢাকার এই সমাবেশ বানচাল করতে দেশের বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মি. আলমগীর। তিনি বলেন, “ঢাকার সমাবেশ ঠেকাতে ঘরে ঘরে অভিযান চালিয়ে, মিথ্যা মামলা দেয়া হচ্ছে। ১১ দিনে ১০৪টি মামলা দায়ের হয়েছে, যেন কেউ সমাবেশে অংশ নিতে না পারে। কিন্তু কোন বাধা দিয়ে ঠেকানো যাবে না।” এছাড়া কুমিল্লা বিভাগের নাম নদীর নামে নয় বরং কুমিল্লা নাম দেয়ার কথাও নেতাদের ভাষণে উঠে আসে। বিএনপি নেতারা আরও বলেন, তারা আন্দোলনের মাধ্যমে সরকার পতন ঘটিয়ে সব রাজনৈতিক দল নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করবেন।